ব দ রু দ্দী ন উ ম র
সর্বনাশ যখন দোরগোড়ায় এসে কড়া নাড়ে তখন হুঁশ বলে আর কিছু থাকে না। আওয়ামী লীগের এখন হয়েছে সেই অবস্থা। কাজেই ১১ জুন ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ ঠেকাবার জন্য যখন তারা ঢাকায় পুলিশ দিয়ে পরিবহন চলাচল জোর করে বন্ধ করে এবং বাইরে থেকে ঢাকায় আসা শত শত বাসের ঢাকা প্রবেশ পুলিশ দিয়ে আটকে রেখে ব্যাপকভাবে জনগণের গালাগালি খাচ্ছে, তখন তারা নিজেদের সংসদীয় দলের সভায় ঘোষণার মতো করে বলছে যে, আগামী ২০১৩ সালের নির্বাচনে তারা ১৭৫টি আসনে জয়লাভ করবে!
একটি সংবাদপত্র রিপোর্টে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী সোমবার সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের পঞ্চদশ বৈঠকে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য সংসদ সদস্যদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, নির্বাচিত হওয়ার মতো কাজ করুন। গণমুখী না হলে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না। আমার কাছে সবার খবর আছে। জরিপ রিপোর্টও রয়েছে। এ রিপোর্ট অনুযায়ী ২৫ জন সংসদ সদস্যের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এরই মধ্যে তাদের ডেকে সেটা জানিয়ে দেয়া হয়েছে। ৩০ থেকে ৩৫ জন সংসদ সদস্য ঝুঁকিমুক্ত নন। আগামী দেড় বছরে এ সংখ্যা কমতেও পারে আবার বাড়তেও পারে। অন্য সদস্যরা ঝুঁকিমুক্ত। বর্তমান সংসদে আওয়ামী লীগের সদস্য সংখ্যা ২৩০। এর মধ্যে ২৫ জনের বিজয়ী না হওয়ার আশঙ্কা থাকলে বাদবাকি ২০৫ জন সম্ভাব্য বিজয়ের তালিকায় থাকবেন। এর মধ্যে কমপক্ষে ৩০ জন বিপদমুক্ত না হলে সম্ভাব্য বিজয়ীর তালিকায় থাকবেন ১৭৫ জন।’ (সমকাল ১২.৬.২০১২)
অন্য এক পত্রিকা রিপোর্টে বলা হয়েছে, গতকাল আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দলীয় সোর্স এবং গভর্নমেন্ট ইনটেলিজেন্স দিয়ে সার্ভে করিয়েছি, এখন আওয়ামী লীগের যে আসন রয়েছে, তার মধ্যে ৩০টির অবস্থা খুবই খারাপ। আরও ৩০টির অবস্থা ফিফটি ফিফটি। বাকি ১৭০টি আসনে আওয়ামী লীগের অবস্থা ভালো। তবে নির্বাচনের দেড় বছর বাকি রয়েছে, এ অবস্থার কমবেশি পরিবর্তন হতে পারে।’ (আমার দেশ, ১২.৬.২০১২)
এ দুই রিপোর্ট থেকেই দেখা যায় যে, কালো মেঘ যখন আওয়ামী লীগের ভবিষ্যেক অন্ধকারে ঢেকে ফেলেছে তখন সেই অন্ধকারের মধ্যেই বিজয়ের আলোক রশ্মি ছড়িয়ে আওয়ামী লীগের সুযোগ্য নেতৃত্ব বাতাসে ভাসছে!
সমকালের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘নির্বাচিত হওয়ার মতো কাজ করুন। গণমুখী না হলে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না।’ নির্বাচিত হওয়ার মতো কাজ না করলে এবং গণমুখী না হলে তার সামনে বসা বশংবদ সংসদ সদস্যরা মনোনয়ন পাবেন না। এটা না হয় বোঝা গেল। কিন্তু মনোনয়ন পাওয়া ও নির্বাচনে জেতা তো এক জিনিস নয়। হাসিনা কি নিজেকে জিজ্ঞেস করেছেন যে, ১১ জুন তারিখে তিনি পুলিশ দিয়ে ঢাকায় যে হরতাল করেছেন এবং পুলিশ দিয়ে শুধু ঢাকা নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঢাকা আসার ক্ষেত্রে যাত্রীদের জন্য যে দুর্ভোগ তৈরি করেছেন সেটা নির্বাচিত হওয়ার মতো কাজ, নির্বাচনে জয়লাভের মতো গণমুখী কাজ? বুদ্ধির দৌড় তো একেই বলে!
ক্ষমতায় আসার পর থেকে বর্তমান সরকার যেসব কাজ করে চলেছে তাতে তার জনসমর্থন দ্রুত কমে গেছে। ঢাকার করপোরেশন নির্বাচন তারা এ পর্যন্ত না করতে পারার কারণ এই নির্বাচনে জেতার কোনো সম্ভাবনা তাদের নিজেদের পক্ষ থেকেই দেখতে না পাওয়া। যাতে নির্বাচনে জেতা যায় এজন্য তারা নানা ল্যাংড়া যুক্তি দেখিয়ে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগ করে নির্বাচনের ঘোষণাও দিয়েছিল। কিন্তু তারপরও যখন তারা দেখল যে এ নির্বাচনে জেতার কোনো সম্ভাবনা নেই তখন তারা সেটা বন্ধ করল! ঢাকায় করপোরেশন নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ যে চরম আকারে পরাজিত হবে তাতে সন্দেহ নেই। শুধু করপোরেশন নির্বাচনই নয়, সাধারণ নির্বাচনেও ঢাকায় তাদের অবস্থা শোচনীয় হবে। কোনো একজন মনোনয়ন পাওয়া আওয়ামী লীগ প্রার্থীও এখানে জয়লাভ করবে না। শেখ হাসিনা নিজে দাঁড়ালেও তার পরাজয় একেবারে অবধারিত। ১৯৯১ সালে তিনি ঢাকায় দুটি আসনে নিজে পরাজিত হয়েছিলেন। ২০১৩ সালে তিনি যদি ঢাকায় প্রার্থী হন, তাহলে জয়ের সম্ভাবনা তো থাকবেই না, তারপরও তার জামানতের টাকা পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত হবে। আগামী নির্বাচনে ঢাকা থেকে প্রার্থী হয়ে তিনি এখানে নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে পারেন।
শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশে আওয়ামী লীগ এখন তার জনপ্রিয়তা যেভাবে হারিয়েছে, জনগণ তাদেরকে যেভাবে বাতিল করে বসে আছেন, তাতে আগামী নির্বাচনে সর্বসাকুল্যে তাদের পক্ষে ২০/২৫টি আসনে জয়লাভ করাও মুশকিল হবে। শেখ হাসিনা নিজেও যদি পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে চান তাহলে অবাস্তব চিন্তা বাদ দিয়ে তাকে ভালোভাবে যাচাই করে এমন এলাকায় দাঁড়াতে হবে যাতে তিনি নিজে কোনোমতে নির্বাচিত হতে পারেন। শেখ মুজিবের কন্যা বলে ভোটাররা তাকে আগামী নির্বাচনে আদরের সঙ্গে নির্বাচিত করবে এমন ভাবার কারণ নেই। এক্ষেত্রে তিনি কার জরিপের ওপর নির্ভর করবেন এটা এক বড় প্রশ্ন। কারণ উপরোক্ত দ্বিতীয় রিপোর্টটিতে আগামী নির্বাচন সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজেদের দলীয় এবং সরকারি গোয়েন্দা সোর্স উভয়ের জরিপ রিপোর্টের ভিত্তিতেই তিনি তাদের নির্বাচন জয়ের তথ্য লাভ করেছেন! এই ‘তথ্য’ যদি তিনি সত্যিই পেয়ে থাকেন তাহলে সেটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। এই ধরনের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তিনি যদি ২০১৩ সালে নিজের নির্বাচনী এলাকা বাছাই করেন তাহলে তার জয়লাভের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু বুদ্ধি যেখানে সামান্য ও বিভ্রান্ত সেখানেই ঔদ্ধত্যের রাজত্ব। আওয়ামী লীগ এখন এই ঔদ্ধত্যের রাজত্ব এমনভাবে কায়েম করেছে যেখানে সুবুদ্ধি প্রবেশের দরজা কড়াকড়িভাবে বন্ধ। ১১ জুন আওয়ামী লীগের ঢাকা বন্ধ এবং সংসদ সদস্যদের সভা ও সেই সভায় শেখ হাসিনার বক্তব্যের থেকে এর বড় প্রমাণ আর কী আছে।
বিএনপি কোনো ফেরেশতাদের পার্টি নয়। তারা আওয়ামী লীগেরই ভগ্নিপ্রতিম দল। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপির জনপ্রিয়তা এখন আওয়ামী লীগের থেকে অনেক বেশি। তাদের এই জনপ্রিয়তা তাদের নিজেদের কোনো সত্ কর্মের ফল নয়। জনপ্রিয়তা তাদের বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পাচ্ছে আওয়ামী লীগের ব্যাপক জনবিরোধী কার্যকলাপ ও তত্পরতার কারণে। অর্থাত্ কোনো ইতিবাচক কারণে নয়, নেতিবাচক কারণেই বিএনপি এখন জনপ্রিয় হয়েছে। এ কারণে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিএনপির খুব বড় আকারের জয়ের সম্ভাবনা। সেটা হলে আওয়ামী লীগের সভাপতি কথিত ‘পরাজিত শত্রুদের’ হাতেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনে পরাজিত হয়ে সরকারি ক্ষমতা থেকে উত্খাত হবে। তবে এবার শুধু সরকারেরই পতন হবে না, রাজনৈতিক দল হিসেবেও আওয়ামী লীগে ধস নামবে।
১৩.৬.২০১২
একটি সংবাদপত্র রিপোর্টে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী সোমবার সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের পঞ্চদশ বৈঠকে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য সংসদ সদস্যদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, নির্বাচিত হওয়ার মতো কাজ করুন। গণমুখী না হলে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না। আমার কাছে সবার খবর আছে। জরিপ রিপোর্টও রয়েছে। এ রিপোর্ট অনুযায়ী ২৫ জন সংসদ সদস্যের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এরই মধ্যে তাদের ডেকে সেটা জানিয়ে দেয়া হয়েছে। ৩০ থেকে ৩৫ জন সংসদ সদস্য ঝুঁকিমুক্ত নন। আগামী দেড় বছরে এ সংখ্যা কমতেও পারে আবার বাড়তেও পারে। অন্য সদস্যরা ঝুঁকিমুক্ত। বর্তমান সংসদে আওয়ামী লীগের সদস্য সংখ্যা ২৩০। এর মধ্যে ২৫ জনের বিজয়ী না হওয়ার আশঙ্কা থাকলে বাদবাকি ২০৫ জন সম্ভাব্য বিজয়ের তালিকায় থাকবেন। এর মধ্যে কমপক্ষে ৩০ জন বিপদমুক্ত না হলে সম্ভাব্য বিজয়ীর তালিকায় থাকবেন ১৭৫ জন।’ (সমকাল ১২.৬.২০১২)
অন্য এক পত্রিকা রিপোর্টে বলা হয়েছে, গতকাল আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দলীয় সোর্স এবং গভর্নমেন্ট ইনটেলিজেন্স দিয়ে সার্ভে করিয়েছি, এখন আওয়ামী লীগের যে আসন রয়েছে, তার মধ্যে ৩০টির অবস্থা খুবই খারাপ। আরও ৩০টির অবস্থা ফিফটি ফিফটি। বাকি ১৭০টি আসনে আওয়ামী লীগের অবস্থা ভালো। তবে নির্বাচনের দেড় বছর বাকি রয়েছে, এ অবস্থার কমবেশি পরিবর্তন হতে পারে।’ (আমার দেশ, ১২.৬.২০১২)
এ দুই রিপোর্ট থেকেই দেখা যায় যে, কালো মেঘ যখন আওয়ামী লীগের ভবিষ্যেক অন্ধকারে ঢেকে ফেলেছে তখন সেই অন্ধকারের মধ্যেই বিজয়ের আলোক রশ্মি ছড়িয়ে আওয়ামী লীগের সুযোগ্য নেতৃত্ব বাতাসে ভাসছে!
সমকালের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘নির্বাচিত হওয়ার মতো কাজ করুন। গণমুখী না হলে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না।’ নির্বাচিত হওয়ার মতো কাজ না করলে এবং গণমুখী না হলে তার সামনে বসা বশংবদ সংসদ সদস্যরা মনোনয়ন পাবেন না। এটা না হয় বোঝা গেল। কিন্তু মনোনয়ন পাওয়া ও নির্বাচনে জেতা তো এক জিনিস নয়। হাসিনা কি নিজেকে জিজ্ঞেস করেছেন যে, ১১ জুন তারিখে তিনি পুলিশ দিয়ে ঢাকায় যে হরতাল করেছেন এবং পুলিশ দিয়ে শুধু ঢাকা নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঢাকা আসার ক্ষেত্রে যাত্রীদের জন্য যে দুর্ভোগ তৈরি করেছেন সেটা নির্বাচিত হওয়ার মতো কাজ, নির্বাচনে জয়লাভের মতো গণমুখী কাজ? বুদ্ধির দৌড় তো একেই বলে!
ক্ষমতায় আসার পর থেকে বর্তমান সরকার যেসব কাজ করে চলেছে তাতে তার জনসমর্থন দ্রুত কমে গেছে। ঢাকার করপোরেশন নির্বাচন তারা এ পর্যন্ত না করতে পারার কারণ এই নির্বাচনে জেতার কোনো সম্ভাবনা তাদের নিজেদের পক্ষ থেকেই দেখতে না পাওয়া। যাতে নির্বাচনে জেতা যায় এজন্য তারা নানা ল্যাংড়া যুক্তি দেখিয়ে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগ করে নির্বাচনের ঘোষণাও দিয়েছিল। কিন্তু তারপরও যখন তারা দেখল যে এ নির্বাচনে জেতার কোনো সম্ভাবনা নেই তখন তারা সেটা বন্ধ করল! ঢাকায় করপোরেশন নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ যে চরম আকারে পরাজিত হবে তাতে সন্দেহ নেই। শুধু করপোরেশন নির্বাচনই নয়, সাধারণ নির্বাচনেও ঢাকায় তাদের অবস্থা শোচনীয় হবে। কোনো একজন মনোনয়ন পাওয়া আওয়ামী লীগ প্রার্থীও এখানে জয়লাভ করবে না। শেখ হাসিনা নিজে দাঁড়ালেও তার পরাজয় একেবারে অবধারিত। ১৯৯১ সালে তিনি ঢাকায় দুটি আসনে নিজে পরাজিত হয়েছিলেন। ২০১৩ সালে তিনি যদি ঢাকায় প্রার্থী হন, তাহলে জয়ের সম্ভাবনা তো থাকবেই না, তারপরও তার জামানতের টাকা পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত হবে। আগামী নির্বাচনে ঢাকা থেকে প্রার্থী হয়ে তিনি এখানে নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে পারেন।
শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশে আওয়ামী লীগ এখন তার জনপ্রিয়তা যেভাবে হারিয়েছে, জনগণ তাদেরকে যেভাবে বাতিল করে বসে আছেন, তাতে আগামী নির্বাচনে সর্বসাকুল্যে তাদের পক্ষে ২০/২৫টি আসনে জয়লাভ করাও মুশকিল হবে। শেখ হাসিনা নিজেও যদি পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে চান তাহলে অবাস্তব চিন্তা বাদ দিয়ে তাকে ভালোভাবে যাচাই করে এমন এলাকায় দাঁড়াতে হবে যাতে তিনি নিজে কোনোমতে নির্বাচিত হতে পারেন। শেখ মুজিবের কন্যা বলে ভোটাররা তাকে আগামী নির্বাচনে আদরের সঙ্গে নির্বাচিত করবে এমন ভাবার কারণ নেই। এক্ষেত্রে তিনি কার জরিপের ওপর নির্ভর করবেন এটা এক বড় প্রশ্ন। কারণ উপরোক্ত দ্বিতীয় রিপোর্টটিতে আগামী নির্বাচন সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজেদের দলীয় এবং সরকারি গোয়েন্দা সোর্স উভয়ের জরিপ রিপোর্টের ভিত্তিতেই তিনি তাদের নির্বাচন জয়ের তথ্য লাভ করেছেন! এই ‘তথ্য’ যদি তিনি সত্যিই পেয়ে থাকেন তাহলে সেটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। এই ধরনের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তিনি যদি ২০১৩ সালে নিজের নির্বাচনী এলাকা বাছাই করেন তাহলে তার জয়লাভের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু বুদ্ধি যেখানে সামান্য ও বিভ্রান্ত সেখানেই ঔদ্ধত্যের রাজত্ব। আওয়ামী লীগ এখন এই ঔদ্ধত্যের রাজত্ব এমনভাবে কায়েম করেছে যেখানে সুবুদ্ধি প্রবেশের দরজা কড়াকড়িভাবে বন্ধ। ১১ জুন আওয়ামী লীগের ঢাকা বন্ধ এবং সংসদ সদস্যদের সভা ও সেই সভায় শেখ হাসিনার বক্তব্যের থেকে এর বড় প্রমাণ আর কী আছে।
বিএনপি কোনো ফেরেশতাদের পার্টি নয়। তারা আওয়ামী লীগেরই ভগ্নিপ্রতিম দল। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপির জনপ্রিয়তা এখন আওয়ামী লীগের থেকে অনেক বেশি। তাদের এই জনপ্রিয়তা তাদের নিজেদের কোনো সত্ কর্মের ফল নয়। জনপ্রিয়তা তাদের বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পাচ্ছে আওয়ামী লীগের ব্যাপক জনবিরোধী কার্যকলাপ ও তত্পরতার কারণে। অর্থাত্ কোনো ইতিবাচক কারণে নয়, নেতিবাচক কারণেই বিএনপি এখন জনপ্রিয় হয়েছে। এ কারণে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিএনপির খুব বড় আকারের জয়ের সম্ভাবনা। সেটা হলে আওয়ামী লীগের সভাপতি কথিত ‘পরাজিত শত্রুদের’ হাতেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনে পরাজিত হয়ে সরকারি ক্ষমতা থেকে উত্খাত হবে। তবে এবার শুধু সরকারেরই পতন হবে না, রাজনৈতিক দল হিসেবেও আওয়ামী লীগে ধস নামবে।
১৩.৬.২০১২
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন